রবিবার , রাত ৮:৫৪ | ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আমার আব্বা মরহুম মাস্টার মোঃ আব্দুল্লাহ পাকিস্তান আমলের প্রথম দিকে ষাটের দশকে সিলেট সরকারী কলেজ (বর্মান এম সি কলেজ) হতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে সরকারী চাকুরীর সুযোগ থাকা সত্বেও তিনি শিক্ষকতাকে পেশা ও নেশা হিসাবে গ্রহণ করেন। ইংরেজী বিষয়ে তিনি একজন দক্ষ ও স্বনামধন্য শিক্ষক ছিলেন। তিনি প্রথমে দুর্গাপুর হাইস্কুলে পরবর্তীতে হরিপুর বহুমূখী উচ্চবিদ্যালয়ে, গোয়াইনঘাট উচ্চবিদ্যালয়ে, গোলাপগঞ্জ একটি উচ্চবিদ্যালয়ে, মীরাবাজার জামেয়া ইসলামীয়া সিলেটে শিক্ষকতা করেছেন। ইংরেজীতে দক্ষতার কারণে মধ্যখানে আশির দশকে কিছুদিন আইবিএস নামক আমেরিকান একটি এনজিওতে চাকুরী করেছেন। ঐ সময় আমেরিকা যাওয়ার অফার পেয়েও তিনি আমেরিকা না গিয়ে পূণরায় দেশ ও শিক্ষার প্রতি অনুরাগী হরিপুর বহুমূখী উচ্চবিদ্যালয়ে পূণরায় শিক্ষকতায় ফিরে আসেন এবং ২০০০ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতার মহান পেশায় নিয়োজিত থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারী ইহজগত ত্যাগ করেন।
আব্বার হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী দেশ- বিদেশে সু প্রতিষ্ঠিত। আব্বার ইন্তেকালের পর উনার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী আব্বাকে স্নরণীয় ও বরণীয় করে রাখতে আমাকে উৎসাহিত করেন। পারিবারিকভাবেও আমরা আব্বার জন্য, আমাদের বংশধরদের জন্য, এলাকার মানুষের জন্য কল্যাণকর ও সদকায়ে জারিয়া স্বরূপ কিছু করার অদম্য বাসনা থেকে এবং এলাকার কয়েকজন যুবকের উৎসাহে আমি এ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করি। স্থান হিসেবে বেছে নেই চারিকাটা ইউনিয়নের সেন্ট্রাল পয়েন্ট ইটাখাল এলাকাকে। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি আমার আব্বার নামে নামকরণ করেছি তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম বাহিরের কালেশন ছাড়াই প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক পর্যায়ের সকল কার্যক্রম আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের অনুদানে শুরু করবো এবং ধাপে ধাপে একান্ত কাছের বন্ধু -বান্ধব, আব্বার ও আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট হতে এবং দ্বীনী কাজে একান্ত উৎসাহী খালেছ লোকদের অনুদান নেব। এক পর্যায়ে এমপিওভুক্ত করে প্রতিষ্ঠানটি আপন গতিতে ছেড়ে দেব। তবে প্রতিষ্ঠানের মূল পরিচালনা পারিবারিক একটি ট্রাষ্ট/সমিতির উপর ন্যাস্থ থাকবে। কারণ এ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য, ইসলামীক ও সদকায়ে জারিয়াহমূলক বৈশিষ্ট্য এবং সুশৃঙ্খলতা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে এর আবশ্যিকতা অপরিহার্য।
এ পর্যন্ত (২০২৪ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত) জমি- একাডেমিক ভবন, একাডেমিক সহ আনুসঙ্গিক কাজে প্রায় ২৫ (পঁচিশ লক্ষ) টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২২ (বাইশ লক্ষ) টাকা আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ভাবে ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকী ৩(তিন লক্ষ) আমার একান্ত কয়েকজন বন্ধু দের নিকট থেকে গৃহিত।
আমাদের প্রতিষ্ঠানের সারাউন্ডিং এলাকাতে কয়েকটি কওমী মাদ্রাসার আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি মাদ্রাসার পক্ষ হতে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল করা হলেও মাহফিলে কোন কালেকশন করা হবেনা। শুধুমাত্র দ্বীনের প্রচারে নিজস্ব উদ্যোগে ওয়াজ মাহফিল করা হবে ইনশা আল্লাহ।
এ প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হল ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইসলামীক ও আধুনিক শিক্ষার সুসমন্বিত সিলেবাসে সুনাগরিক তৈরীর মাধ্যমে সদকায়ে জারিয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।
মহান আল্লাহ যেন আমাদের এ মহৎ কাজ কবুল ও সফল করেন, আ-মীন ।